জ্বর থাকলে ঢাকা ছাড়ার আগে রক্ত পরীক্ষার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রকাশিতঃ 7:07 pm | August 08, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলোঃ

ঈদে ঘরমুখো মানুষের কারো শরীরে জ্বরসহ ডেঙ্গুর অন্যান্য উপসর্গ থাকলে তাদের রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আহ্বান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার(৮ আগস্ট) রাজধানীর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এ কথা জানিয়েছেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ঈদে যারা ঘরে ফিরবেন, সবাই যেন সতর্ক, সচেতন থাকেন। যাদের মাথাব্যথা করবে, বমি বমি ভাব হবে, খাওয়ার ইচ্ছে থাকবে না, শরীরে জ্বর জ্বর ভাব থাকবে, তারা রক্ত পরীক্ষা করে এলাকায় বা ঘরের দিকে গৃহযাত্রা করবেন- এটা আপনাদের সবার কাছে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার আহ্বান।

সেতুমন্ত্রী বলেন, আজ প্রধানমন্ত্রী গণভবনে নেমেই ডেঙ্গুর সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। কে কী করছে, কার কী বক্তব্য। বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেছেন, এখন একটাই কাজ, ভয়ংকর এডিস মশাকে প্রতিরোধ করতে হবে, ডেঙ্গুকে প্রতিরোধ করতে হবে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান আরো জোরদার করতে হবে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সরকার, দুই সিটি করপোরেশন এবং আমরা কেউই ডেঙ্গুকে নিয়ে নিষ্ক্রিয় ছিলাম না। চিকিৎসকদের দিয়ে আমরা মনিটরিং সেল করেছি। ডেঙ্গু আক্রান্ত মানুষের পাশে আমরা আছি ২৪ ঘণ্টা। এগুলো আমরা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। তিনি চিকিৎসার জন্য যখন লন্ডনে ছিলেন তখনো প্রতিদিন ফোন করে করে খোঁজ রাখছিলেন।

বিএনপির উদ্দেশে তিনি বলেন, যারা বিরোধিতা করে সেই বিরোধীদল বিএনপিকে বলতে চাই, বিরোধীদল হিসেবে বন্যার্ত এলাকায় আপনারা কী কাজ করেছেন, কী সাফল্যের দাবি রেখেছেন? আজকে কোথাও ডেঙ্গু মোকাবিলায় দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখেননি, বিরোধীদলের ভূমিকা পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। বিরোধীদল হিসেবে আপনাদের ব্যর্থতা স্বীকার করুন। তারপর সরকারের ব্যর্থতা সম্পর্কে কথা বলুন। সমালোচনা করে দায়িত্বশীল হওয়া যায় না, প্রেস ব্রিফিং করে দায়িত্বশীল হওয়া যায় না।

এ সময় মানবতার স্বার্থে ডেঙ্গু নিয়ে রাজনীতি না করে প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে সমন্বিতভাবে ডেঙ্গুবিরোধী লড়াইয়ে নামতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানান ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, প্রেস ব্রিফিং, লিপ সার্ভিস ছাড়া আপনারা কোথাও দায়িত্বশীল বিরোধী দলের ভূমিকার পালন করেননি। আগে নিজেদের ব্যর্থতা স্বীকার করুন, পরে সরকারের ব্যর্থতা সম্পর্কে কথা বলুন। আসুন, প্রধানমন্ত্রীর ডাকে সাড়া দিয়ে সবাই মিলে ডেঙ্গু মোকাবিলায় কাজ করি।

বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের কথা স্মরণ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, এ আগস্ট মাসেই বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্ম। আবার এই আগস্ট মাসেই বঙ্গমাতার রক্তাক্ত বিদায়। আমরা হাসি কান্নার মিছিলে, আনন্দ কান্নার মিছিলে বাংলার এ মহীয়সী নারী, রমণীর আত্মার প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেছি। আজকের যে ত্রাণসামগ্রী সেটাও তাঁকে উৎসর্গ করেছি বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে। তিনি শুধু বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী ছিলেন না, তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সহযোদ্ধা।

‘তিনি শুধু জীবনসাথীই ছিলেন না তিনি রাজনৈতিক সাথী, সহযোদ্ধা, সুখ-দুঃখের অংশীদারও ছিলেন। বঙ্গবন্ধু এক যুগ কারাগারে ছিলেন, কারাগার থেকে কারাগার। বঙ্গমাতা এক দিকে সংসার সামলিয়েছেন, আরেক দিকে রাজনীতি সামলিয়েছেন।’

কাদের বলেন, ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বঙ্গবন্ধুর পাশে ছিলেন বলেই তিনি বঙ্গবন্ধু হয়েছেন। তিনি বাংলার স্বাধীনতার এক বীর কন্যা, এক বীর মাতা।

এ সময় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির আয়োজনে গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, বগুড়া, মানিকগঞ্জ, গোপালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, বান্দরবান, সিরাজগঞ্জসহ ১০ জেলার প্রত্যেকটিতে এক হাজার শাড়ি, এক হাজার লুঙ্গি, সেমাই, এক হাজার মশারি বিতরণের কার্যক্রম উদ্বোধন করেন ওবায়দুল কাদের।

কালের আলো/বিএ/এমএইচএম

Print Friendly, PDF & Email