ছাত্রলীগ সভাপতির কান্নাতেও মন গলেনি আনন্দমোহন কলেজ ছাত্রলীগের
প্রকাশিতঃ 12:31 am | August 01, 2019
নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:
নিজে যাদেরকে নেতা বানিয়েছেন এবার তাঁরাই তাঁর বিরুদ্ধে অবস্থা নিলেন। নিজেদের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে কলেজের সপ্তাহব্যাপী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রবেশই করতে দিলেন না ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রকিবুল ইসলাম রকিবকে। ফলশ্রুতিতে রকিব কাঁদলেন। এরপরেও মন গলাতে ব্যর্থ হলেন এক সময়কার নিজের অনুসারীদের।
বুধবার (৩১ জুলাই) দুপুরে নগরীর আনন্দমোহন কলেজে ৫ দিনব্যাপী সাংস্কৃতিক সপ্তাহের সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ঘটলো এমন ঘটনা। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় মাথা ফাটলো কলেজটির নিরীহ এক শিক্ষার্থীর। তাকে ভর্তি করা হয়েছে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
জানা যায়, নানা কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে বিরোধ তুঙ্গে উঠেছে জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রকিবুল ইসলাম রকিব ও আনন্দমোহন কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক মাহমুদুল হাসান সবুজ, যুগ্ম আহবায়ক মাহফুজুল আলম ফাহাদ এবং শেখ সজলসহ কলেজটির অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে।
চলমান এ বিরোধের মধ্যেই বুধবার (৩১ জুলাই) সকালে কলেজটির সাংস্কৃতিক উৎসবে যোগ দিতে ক্যাম্পাসে হাজির হন জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি। কিন্তু ক্যাম্পাস তো দূরের কথা গেইটের বাইরেই ঘন্টা তিনেক অপেক্ষা করে নিজের এক সময়কার অনুসারীদের নেতিবাচক স্লোগান হজম করতে হয়েছে তাকে।
এক পর্যায়ে রকিব গেইটের বাইরে মাটিতে বসে পড়েন নিজের অনুগত নেতা-কর্মীদের নিয়ে। গেইটের ভেতরে-বাইরে চলে পাল্টাপাল্টি স্লোগান। ওই সময় মাটিতে বসেই অঝোরে কাঁদেন রকিব। বাধ্য হয়েই বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে বাড়ি ফিরে যান তিনি।
আনন্দমোহন কলেজ ছাত্রলীগ এ বিদ্রোহের নেপথ্য কারণ হিসেবে বলছে, রকিব ক্ষমতার দম্ভে দীর্ঘ সময় আনন্দমোহন কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ‘বগলদাবা’ করে রাখেন। এ সময় ক্যাম্পাস পরিণত হয় মাদকের আখড়ায়। পান থেকে চুন খসলেই কলেজের নিরীহ শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের মুখে পড়তে হতো রকিবের লোকজনের কাছে।
আনন্দমোহন কলেজ ছাত্রলীগের আহবায়ক মাহমুদুল হাসান সবুজ জানান, রকিবের অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছে কলেজ ছাত্রলীগ। তাঁরা ক্যাম্পাসে মাদক নির্মুলের ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু রকিবের ভাইসহ স্বজনদের হাতে প্রতিনিয়ত নির্যাতনের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের। এদিন রকিব ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে পুনরায় শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালাতো। ফলে সুশৃঙ্খল কায়দাতেই তাকে প্রতিহত করা হয়েছে।
যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি রকিবুল ইসলাম রকিব। তিনি বলেন, ‘আমি নিজে আনন্দমোহন কলেজের হিসাব বিজ্ঞানের ছাত্র ছিলাম এবং কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি থেকে ধাপে ধাপে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হয়েছি।
আমি বরাবরই মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স অবস্থানে ছিলাম। একটি মহলের অঙ্গুলী হেলনে কলেজ ছাত্রলীগ ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা ফেলেছে। ওদের সহায়তা করছে পুলিশ প্রশাসন। মূলত পুলিশ প্রশাসনই আমাকে অনুষ্ঠানে যেতে বাঁধা দিয়েছে।’
এ বিষয়ে কোতোয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল ইসলাম দাবি করেন, পুলিশ নয় রকিবকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দেয়নি কলেজ ছাত্রলীগ। কারণ রকিব বহিরাগত। তাঁর আগমনকে ঘিরে ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক পরিবেশ যাতে বিনষ্ট না হয় সেদিকেই সতর্ক অবস্থান ছিল পুলিশের।
কালের আলো/এআর/এমএম