আগামী দিনের বড় চ্যালেঞ্জ মানব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা : স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 9:40 pm | June 26, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

মানব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আগামীতে দেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেছেন, রেলপথ, নৌপথ ও সড়কপথের কঠিন বর্জ্য ও পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কেননা মানসম্মত মধ্যম আয়ের দেশের জন্য আগামীতে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে মানব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা।

বুধবার(২৬ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রেলপথ, নৌপথ ও সড়কপথে কঠিন বর্জ্য ও পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনা’ বিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, একটি দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে সে দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই যোগাযোগ মাধ্যমসমূহে সঠিক স্যানিটেশন ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ ও প্রয়োজনীয় বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সন্নিবেশ ঘটানো এই উন্নয়নের যাত্রাকেই আরো বেগবান করবে। পরিবহন মাধ্যমের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ ও নীতি নির্ধারকদের এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণে আন্তরিক হলেই অবস্থার পরিবর্তন সম্ভব বলেও জানান মন্ত্রী।

মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের বেসিক স্যানিটেশন কভারেজ প্রায় শতভাগ। উন্মুক্ত স্থানে মলত্যাগের হার শতকরা মাত্র ১ ভাগ। স্যানিটেশনের এই সাফল্য পর্যালোচনা পূর্বক প্রকৃত অর্থে স্যানিটেশন অর্জিত হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করার বিষয়টি ভুলে গেলে চলবে না।

তিনি বলেন, রেলপথ, নৌপথ ও সড়কপথের কঠিন ও পয়ঃবর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন বেশ দুরুহ কাজ। বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশগুলোতে যাতায়াত ব্যবস্থার স্যানিটেশনকে যদি অনুসরণ করা সম্ভব হয়, তাহলে আমরা অনেকটা অগ্রগামী হতে পারবো।

তাজুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রণালয় এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে রেলপথ, পানিপথ (নৌপথ) ও সড়ক পথে স্যানিটেশন সরকারের নীতিমালা প্রস্তুতকরণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।

কর্মশালায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞরা তাদের গবেষণালব্ধ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। কর্মশালায় জনস্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সাইফুর রহমানের সভাপতিত্বে কর্মশালায় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।

সিটি করপোরেশন এলাকায় এবার জলাবদ্ধতা হয়নি

জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেছেন, বর্ষা মৌসুমে সিটি করপোরেশন ও পৌরসভায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়। এজন্য আমি বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই সিটি করপোরেশন ও পৌরসভার মেয়রদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। আমরা আগে থেকেই ড্রেনগুলো পরিষ্কার করে দিয়েছি যাতে বৃষ্টির পানিতে ওভারফ্লো না হয়। আগে থেকে ড্রেন পরিষ্কার করায় এবার জলাবদ্ধতা দেখা দেয়নি।

তিনি বলেন, আগামীতে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কঠিন চ্যালেঞ্জ। আমাদের পার ক্যাপিটা ইনকাম বাড়ছে, কনজামশন বাড়ছে, ওয়েস্টও বাড়ছে। এই বর্জ্য নিঃসরণ করার জন্য আমি এবং আমার সরকার কাজ করছি। কিভাবে সব শহর থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যন্ত এই বর্জ্য নিঃসরণ করা যায়।

তাজুল ইসলাম বলেন, দেশে উন্নয়ন হচ্ছে, বাজারে তারল্য সচল আছে। দেশী মুদ্রার কোনো সংকট নেই। বৈদেশিক মুদ্রারও কোনো সংকট নেই। আমার শহর আমার গ্রাম কর্মসূচি বাস্তবায়নে আমরা কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। বলা হয় জনসংখ্যা এতো বেশি কর্মসংস্থান হবে কিভাবে।

‘কিন্তু জনসংখ্যা যত বেশিই হোক যাতে কর্মসংস্থান হয় সে ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। আমাদের অবকাঠামো নির্মাণে সশিক্ষিত শ্রমিকের সংকট আছে। ভারতে একটি শ্রমিক প্রশিক্ষণ স্টোর আছে। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মানসম্পন্ন শ্রমিক তৈরি করার জন্য আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের সঙ্গে এমওইউ এর মাধ্যমে শ্রমিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।’

তিনি বলেন, আমাদের দেশের অধিকাংশ রাস্তাই স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের। এ রাস্তাগুলো সনাতনীভাবে কম টাকায়, কম বরাদ্দে নির্মিত। আমরা বুয়েটকে দিয়ে একটা ডিজাইন করছি। এই সমস্যা আর থাকবে না। আমরা একটা সফটওয়্যার তৈরির কাজ করছি। ওই সফটওয়্যারে কাজ সম্পন্ন হলে আমরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে অটোমোবাইল প্রসেসের মাধ্যমে জানতে পারবো কোথায় কোন রাস্তা দ্রুত সংস্কার করা দরকার। সে অনুযায়ী প্রকৌশলীরাও অফিসে বসেই কাজ করতে পারবে।

কালের আলো/এআর/এমএম

Print Friendly, PDF & Email