২১ বার বাজেট আলোচনায় সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী, কথা বললেন চেনা স্টাইলেই (ভিডিও)

প্রকাশিতঃ 5:25 am | June 17, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলার সৎ সাহস রয়েছে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি’র। সব সময়ই ৫ বারের এ সংসদ সদস্যের বক্তব্যে থাকে তথ্য ও বাস্তবতার নির্যাস। গঠনমূলক সমালোচনা করেন বিরোধী মতের।

আরো পড়ুন: বাজেট বাস্তবায়নে তিন বিষয়কেই চ্যালেঞ্জ মনে করেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ফারুক খান

কুরুচিপূর্ণ শব্দে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করা ধাঁচে নেই মোটেও। আবার নিজেও গঠনমূলক সমালোচনা সহ্য করার মানসিকতা রাখেন। সবকিছুতেই সজাগ দৃষ্টি রয়েছে তাঁর। যারপরেনাই দলের ভেতরে-বাইরেও তাঁর ভূমিকা প্রশংসিত।

রোববার (১৬ জুন) সংসদ অধিবেশনে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের সম্পুরক বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনার সময় সরকারি ও বিএনপি’র সংসদ সদস্যের পাল্টাপাল্টি বক্তৃতায় উত্তপ্ত আলোচনায় আবারো নিজের চেনা স্টাইলেই হাজির হলেন সাবেক এ বাণিজ্যমন্ত্রী। কড়া মেজাজে তেঁড়েফুড়ে নয় প্রতিপক্ষকে কাউন্টার অ্যাটাক করলেন বুদ্ধিদীপ্ত বাগবৈদগ্ধের মাধ্যমে শিল্পসম্মতভাবেই।

মোট ২১ বার সংসদে বাজেট আলোচনার অভিজ্ঞতায় ঋদ্ধ সাবেক এ বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী বিএনপি’র সংসদ সদস্যদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মানবিকতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ বিশ্বনেতারা। সারা বিশ্বে তিনি মানবতা ও সততার প্রতীক।

দেশের উন্নয়নে সরকারের পরিকল্পনা তৃণমূলে বাস্তবায়ন হওয়া, গত ১০ বছরে শেখ হাসিনার সরকারের বাজেটে দেশের অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন, সরকারের উদ্যোগে ঘরে ঘরে বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত করে তোলা, জ্ঞানভিত্তিক ও প্রযুক্তি ভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে সরকারের উদ্যোগী ভূমিকার কথা বলে গেলেন অকপটে।

বাংলাদেশের চারিদিকে উন্নয়ন ও অগ্রগতি
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এ নেতা বললেন, ‘বাংলাদেশের যেদিকেই তাকাই চারিদিকে শুধু উন্নয়ন ও অগ্রগতি। আজকে বাংলাদেশের ভিতরে প্রতিটি মানুষের আয় বেড়েছে। প্রতিটি মানুষের আয়ু বেড়েছে। মাতৃমৃত্যু কমেছে, শিশু মৃত্যু কমেছে। সারাবিশ্ব প্রতিটি সেক্টরে এই উন্নয়নের কথা স্বীকার করেছেন। পৃথিবীর মধ্যে সবচেয়ে সৎ, কর্মঠ ও পরিশ্রমী ৫ প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে শেখ হাসিনা অন্যতম।

গত ১০ বছরে সরকারের বাজেট পাল্টে দিয়েছে দেশের চিত্র
তিনি বলেন, সরকারের পরিকল্পনা তৃণমুলে শতভাগ বাস্তবায়ন হয়েছে। গত ১০ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের দেয়া বাজেট গোটা দেশের চিত্রকেই পাল্টে দিয়েছে। প্রতিটি মানুষের ঘরে ঘরে এখন বিদ্যুতের আলো।

জ্ঞানভিত্তিক ও প্রযুক্তিভিত্তিক সমাজ বিএনপি বিশ্বাস করে না বলেই তারা সাবমেরিন কেবলের সঙ্গে যুক্ত হননি। বিএনপির মুখে সমালোচনা মানায় না। কারণ তাদের সময় দেশে কোন উন্নয়ন হয়নি।

গোটা বিশ্বে অনন্য দৃষ্টান্ত শেখ হাসিনা
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেয়ায় এরই মধ্যে বিশ্বের কাছে প্রশংসিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম ‘মাদার অব হিউম্যানিটি’(মানবতার জননী) বলে অখ্যায়িত করার বিষয়টি টানতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সমস্যার যেভাবে তিনি হ্যান্ডেল করেছেন।

এর মাধ্যমে তিনি বিশ্বকে দেখিয়েছেন রাষ্ট্রনায়কেরা শুধু তাদের নিজের রাষ্ট্রের কথা নয়; অন্য মানুষের কথাও চিন্তা করতে হয়। মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে তিনি রোহিঙ্গা সমস্যা ট্যাকেল করেছেন এবং এখনো কাজ করে যাচ্ছেন। এর মাধ্যমে গোটা বিশ্বে তিনি এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

২০১৯-২০ অর্থ বছরের এ বাজেটকে স্বপ্নপূরণের বাজেট হিসেবে উল্লেখ করে লে. কর্ণেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খান এমপি তৃণমূল পর্যায়ে শতভাগ বাজেট কীভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে সেই পথও বাতলে দেন।

ভিডিও-

বিদ্যুৎ নিয়ে আলোকপাত
নিজের নির্বাচনী এলাকার শতভাগ বাড়িতেই বিদ্যুত পৌঁছে যাওয়ার উদাহরণ টেনে গোটা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোও বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হওয়ার বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গেই তুলে ধরেন সাবেক এ মন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমরা যদি ভালো করে চিন্তা করে দেখি. আজ থেকে ১০ থেকে ১৫ বছর আগে বাংলাদেশে বিদ্যুতের ব্যবহার শুধুমাত্র করত শহরের বড় লোকেরা।

আজকে সে বিদ্যুৎ গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে বাড়িতে চলে গেছে। কিন্তু আমি এখনো মনে করি, এই বিদ্যুতের ব্যপারে আমাদেরকে আরো সর্তক হতে হবে। এই জন্যে যে আমি গ্রামে দেখেছি ঝড়-ঝঞ্ঝা হলেই বিদ্যুৎ থাকে না, গ্রামের যে লাইনগুলো করা হয়েছে, সে লাইনগুলোকে আরো উন্নত করতে হবে।

এ ব্যপারে আমি ইতোমধ্যে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী ও আরইবির চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলেছি এবং শোনেছি যে, এ বছরের বাজেটে তাঁরা সে ধরনের পরিকল্পনা করেছে লাইনগুলো আরো সুন্দরভাবে তৈরি করার।

শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই সোনার বাংলা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন লে. কর্ণেল (অব:) মুহাম্মদ ফারুক খান। তিনি প্রধানমন্ত্রীর উচ্চারণ করা রবার্ট ফ্রাস্টের একটা কবিতা উদ্বৃতি করেন এভাবে- The woods are lovely, dark, and deep. But I have promises to keep, And miles to go before I sleep, And miles to go before I sleep.

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সুর মিলিয়ে তিনি বলেন, ‘সোনার বাংলা গড়ে আমাদের অঙ্গীকার রক্ষা করতে হবে। সে অঙ্গীকার রক্ষা করার জন্য এখনই কোন বিশ্রামের প্রয়োজন নেই। ইনশাআল্লাহ আমরা, এই বাংলাদেশের মানুষ মহান সংসদের সদস্যবৃন্দ, দেশের ১৭ কোটি লোক যতদিন শেখ হাসিনার সাথে আছে, ততদিন তাঁর হাতকে আমরা শক্তিশালী করবো। ইনশাআল্লাহ আমরা সোনার বাংলা গঠন করব।

কালের আলো/এএ/এএএমকে

Print Friendly, PDF & Email