ওসি মোয়াজ্জেম গ্রেফতার

প্রকাশিতঃ 4:00 pm | June 16, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের পরোয়ানাভুক্ত আসামি ফেনীর সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

রোববার (১৬ জুন) শাহবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

পুলিশ সদর দফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি, মিডিয়া) সোহেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বিকেল ৩টার দিকে শাহবাগ এলাকা থেকে শাহবাগ পুলিশ মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার করেছে।

শাহবাগ থানার ওসি আবুল হাসান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আমরা পুলিশ পরিদর্শক মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার করেছি। তাকে শাহবাগ থানায় রাখা হয়েছে। ,

এর আগে অধ্যক্ষের কাছে শ্লীলতাহানির শিকার হয়ে থানায় অভিযোগ দিতে গিয়েছিলেন সোনাগাজী ইসলামিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফি। ওই সময় নুসরাতের জবানবন্দি ধারণ করে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন ওসি মোয়াজ্জেম।

থানায় নুসরাতকে হয়রানির এ ঘটনায় ঢাকার সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালে বাদি হয়ে মামলা করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। আদালত মামলাটির তদন্ত ভার দেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই)।

পরে গত মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সত্যতা তুলে ধরে ২৭ মে পিবিআইয়ের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রীমা সুলতানা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলে আদালত মোয়াজ্জেমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর থেকেই অভিযান চালিয়েও মোয়াজ্জেম হোসেনকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। ফেনী ও ঢাকায় বারবার অভিযান চালিয়েও খুঁজে পাওয়া যায়নি তাকে।

ফেনী জেলা পুলিশ ঢাকায় এসেও অভিযান চালিয়েছে। তবে মোয়াজ্জেমের কোনো হদিস তারা বের করতে পারেনি।

সাময়িক বরখাস্ত করার পর মোয়াজ্জেমকে রংপুর রেঞ্জের ডিআইজি অফিসে সংযুক্ত করা হয়। সেখানেও পাঠানো হয় গ্রেফতারি পরোয়ানা। তবে মোয়াজ্জেম সেখানে যোগ না দেওয়ায় সেখান থেকেও তাকে গ্রেফতার করা যায়নি।

এর আগে, নুসরাত থানায় গিয়ে ওসি মোয়াজ্জেমের কাছে হয়রানির শিকার হলেও পরে তার মা নুসরাতের মাদরাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন, সিরাজকে আটক করে পুলিশ।

এ ঘটনায় নুসরাতের মা বাদী হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকেই সিরাজ কারাগারে রয়েছেন। তবে কারাগার থেকেই তিনি নুসরাতের পরিবারের ওপর মামলা তুলে নিতে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। নুসরাতের পরিবার মামলা তুলে না নিলে সহযোগীদের দিয়ে ৬ এপ্রিল গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় অধ্যক্ষের সহযোগীরা।

গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় নুসরাতকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১০ এপ্রিল না ফেরার দেশে পাড়ি জমান নুসরাত।

কালের আলো/আরএম/এমএইচএ

Print Friendly, PDF & Email