ময়মনসিংহে ঘুষ না দেয়ায় ‘আনন্দ স্কুল’ বন্ধের অভিযোগ

প্রকাশিতঃ 7:16 pm | March 05, 2018

কালের আলো ডেস্ক:

ময়মনসিংহের গৌরীপুরে ঘুষ না দেয়ায় আনন্দ স্কুলের শিক্ষক আঞ্জুমানারাকে চাকরিচ্যুত করার হুমকির পাশাপাশি তার স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে এক স্কুল পরিদর্শকের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত ওই পরির্দশকের নাম শামছুল হক। সর্বশেষ ওই স্কুল পরিদর্শক আঞ্জুমানারার বেতন উত্তোলনের জন্য সাত হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষক ওই স্কুল পরিদর্শকের বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আঞ্জুমানারার বাড়ি উপজেলার সহনাটি ইউনিয়নের রাইশিমুল গ্রামে। ২০১৪ সালে রস্ক ফেইজ-২ প্রকল্পের তিনি রাইশিমুল পাঁচপাড়া আনন্দস্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।

২০১৭ সালের জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের বেতন উত্তোলনের সময় রেজুলেশন খাতায় স্বাক্ষর করার জন্য প্রকল্পের স্কুল পরির্দশক শামছুল হক আঞ্জুমানারার কাছে ঘুষ দাবি করেন। ঘুষ না দেয়া না হলে তিনি আঞ্জুমানারাকে চাকরিচ্যুত করার হুমকিও দেন। পরে আঞ্জুমানারা চার মাসের বেতন উত্তোলন করতে গিয়ে ওই স্কুল পরিদর্শককে পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ দেন। পরবর্তী সময়ে একই বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের বেতন উত্তোলনের সময় ওই স্কুল পরিদর্শককে আরো এক হাজার টাকা করে ঘুষ দিতে হয় আঞ্জুমানারাকে।

এর পর আঞ্জুমানারা বেতন তোলার জন্য আর ঘুষ দিতে অস্বীকৃতি জানালে ওই স্কুল পরিদর্শক চলতি বছরের শুরু থেকে স্কুল বন্ধ করে দেন।এর ফলে আঞ্জুমানারা অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করছেন।

গত বুধবার (২৮ ফ্রেব্রুয়ারি) বিকেলে তিনি ওই স্কুল পরিদর্শকের বিরুদ্ধে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

আঞ্জুমানারা বলেন, “আমি দরিদ্র মানুষ। এখানে চাকরি করে প্রতি মাসে তিন হাজার টাকার মতো বেতন পাই। অথচ ছয় মাসের বেতন উত্তোলনের জন্য শামছুল হক স্যার আমার কাছ থেকে সাত হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছে। এর পর স্যার বলেছে চাকরি করতে হলে উনাকে প্রতি মাসেই টাকা দিতে হবে। আমি এতে অস্বীকৃতি জানালে চলতি বছরের শুরুতে আমার স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়। আমি দরিদ্র মানুষ এই অল্প টাকার বেতন দিয়ে নিজের সংসার ও পড়াশোনার খরচ চালাচ্ছিলাম। মূলত শামছুল হক স্যারের দাবি পূরণ না করতে পারায় আমার স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্কুল পরিদর্শক শামছুল হক বলেন, “আমি মসজিদ কমিটির সভাপতি। ঘুষ নেয়ার প্রশ্নই উঠে না। অনিয়মের কারণে আঞ্জুমানারার বেতন আটকা ছিল। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বলে তার বেতন উত্তোলনের ব্যবস্থা করে দিয়েছি। চাকিরচ্যুত করার হুমকি দেয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট।”

আনন্দ স্কুল প্রকল্পের ট্রেনিং কো-অর্ডিনেটর মাপিয়া খাতুন বলেন, “শিক্ষার্থী কম থাকার কারণে আঞ্জুমানারার স্কুল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তবে স্কুল পরিদর্শক যদি ঘুষ নিয়ে থাকে তাহলে বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউএনও মর্জিনা আক্তার বলেন, “অভিযোগ দেখে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

সূত্র: নিউজবাংলাদেশ

Print Friendly, PDF & Email