৪০৮ কোটি টাকার ৭৯০টি গাড়ি পাচ্ছে পুলিশ

প্রকাশিতঃ 9:46 pm | May 29, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কেনা হচ্ছে ১৪০টি এসইউভি (জিপ) এবং ৬৫০টি ডাবল কেবিন পিকআপ। মোট ৭৯০টি গাড়ি কেনা হবে। এজন্য সরকারের ব্যয় হবে ৪০৭ কোটি ৯০ লাখ ৫০ হাজার টাকা। এ-সংক্রান্ত দুটি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

কমিটির আহ্বায়ক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল দেশের বাইরে থাকায় কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকের সভাপতিত্বে বুধবার(২৯ মে) মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠকে কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোসাম্মৎ নাসিমা বেগম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, চলতি (২০১৮-১৯) অর্থবছর ‘বাংলাদেশ পুলিশের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ও যন্ত্রপাতি ক্রয়’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় অপারেশনের কাজে ব্যবহারের জন্য ১৪০টি জিপ ক্রয়ের প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ১২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে এসব গাড়ি সরবরাহ করবে সরকারি প্রতিষ্ঠান ‘প্রগতি’। প্রতিটি জিপের দাম পড়বে ৯০ লাখ টাকা।

তিনি বলেন, কমিটি অন্য একটি ক্রয় প্রস্তাবের মাধ্যমে একই প্রকল্পের আওতায় অপারেশনের কাজে ব্যবহারের জন্য ৬৫০টি ডাবল কেবিন পিকআপ ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ২৮১ কোটি ৯০ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয় এসব গাড়ি সরবরাহ করবে ‘র‌্যাংগস লিমিটেড’। প্রতিটি পিকআপের দাম পড়বে ৪৩ লাখ ৩৭ হাজার টাকা।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। সীমিত জনবল, লজিস্টিকস এবং যন্ত্রপাতি নিয়ে বাংলাদেশ পুলিশ গত কয়েক বছরে সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে প্রায় প্রতিটি অপারেশনে সফলতা অর্জন করেছে। এসব অপারেশন জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশ মধ্যপন্থী ইসলামিক সংস্কৃতির জন্য বিশ্বব্যাপী সুনাম অর্জন করেছে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ লালনের পাশাপাশি সহনশীল এবং বহুত্ববাদ হচ্ছে বাংলাদেশের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য, যা এ অঞ্চলের জন্য একটি মডেল। তবে সম্প্রতি কিছু আন্তর্জাতিক ইসলামিক জঙ্গিগোষ্ঠীর কারণে বাংলাদেশের এ অর্জন হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে, যা বাংলাদেশের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

নিরাপত্তা, সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর অর্থায়নের উৎস এবং সন্ত্রাসীগোষ্ঠীর সদস্যদের অনুপ্রেরণা ইত্যাদি দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, বর্তমানে সন্ত্রাসের ধরন পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশ বিশেষ করে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সাম্প্রতিক সময়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কিছু ভয়ানক সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পরিকল্পনা নস্যাৎ করতে সক্ষম হয়েছে। ফলে জীবন ও সম্পদ রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে।

বর্তমানে ডিএমপিকে প্রতিনিয়ত সন্ত্রাসী কার্যক্রমের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে হয়। তবে প্রয়োজনীয় যানবাহন ও লজিস্টিকসের অভাবে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে পুলিশকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। আর্মড পারসোনাল কেরিয়ারের (এপিসি) মতো সুসজ্জিত যানবাহনের অভাবে অনেক সময় সন্ত্রাসী কার্যক্রম দমনে অভিযান পরিচালনা সম্ভব হয় না। তাই বিভিন্ন ধরনের যানবাহন ও যন্ত্রপাতি ক্রয় করা প্রয়োজন হচ্ছে বলে ক্রয় প্রস্তাবে বলা হয়েছে।

কালের আলো/এমআরএম

Print Friendly, PDF & Email