ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে আইজিপির নির্দেশ

প্রকাশিতঃ 5:59 pm | May 21, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

ঈদে ঘরমুখো মানুষের নিরাপদ যাতায়াত ও ঈদ আনন্দ নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার)।

মঙ্গলবার(২১ মে) দুপুরে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ নির্দেশনা দেন।

রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বড় বড় শপিং মলে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি নারী পুলিশ ও সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়নের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করারও নির্দেশনা দিয়েছেন আইজিপি।

এছাড়া মার্কেটসমূহে সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন, হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে নিরাপত্তা তল্লাশি এবং বড় বড় শপিং মলে আর্চওয়ে ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন।

তিনি বলেন, দেশের প্রধান প্রধান ঈদ জামাত স্থলে স্যুইপিং এবং আর্চওয়ে স্থাপনের মাধ্যমে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। গুরুত্বপূর্ণ ঈদ জামাত স্থলের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হবে।

পুলিশ প্রধান জানান, বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল এবং রেল স্টেশনে টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধ, অজ্ঞান ও মলম পার্টির অপতৎপরতা বন্ধ করা এবং চুরি ও ছিনতাই রোধে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ মোতায়েন করে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এক্ষেত্রে মেট্রোপলিটন, জেলা, হাইওয়ে ও নৌপুলিশ সমন্বিতভাবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

আইজিপি বলেন, ঈদের ছুটিতে বসতবাড়ি, ফ্ল্যাট এবং অ্যাপার্টমেন্টে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে টহল বাড়াতে হবে। সবধরনের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং কেপিআইসমূহের নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হবে।

আইজিপি জঙ্গি ও উগ্রপন্থিদের তৎপরতা রোধে গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি ও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে বলেন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, দস্যুতাসহ অন্যান্য অপরাধ প্রতিরোধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

মাদক চোরাচালান ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালনারও নির্দেশ দেন আইজিপি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিমূলক পোস্ট, মন্তব্য বা ছবি আপলোড করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টাকারীদের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ। পর্যটন স্পটসমূহ বিশেষ করে বিনোদন কেন্দ্র, পার্ক, সিনেমা হল ও অন্যান্য জনসমাগমস্থলে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ, ট্যুরিস্ট পুলিশ দেশের গুরুত্বপূর্ণ ট্যুরিস্ট স্পটসমূহে হেল্প ডেস্ক স্থাপন করার কথাও জানান তিনি।

আইজিপি আশা প্রকাশ করে বলেন, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা সবাই প্রিয়জনের সাথে আনন্দ ও নিরাপদে ঈদ উদ্যাপন করতে সক্ষম হবো।

এছাড়া সভায় ব্যাংক ও অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বড় অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের ক্ষেত্রে মানি এস্কর্ট প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মহাসড়কে সবধরনের চাঁদাবাজি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে আইজিপি জানান, এ লক্ষ্যে হাইওয়ে ও স্থানীয় পুলিশ, বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং কমিউনিটি পুলিশের সমন্বয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টসমূহ সিসি ক্যামেরার আওতায় এনে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মহাসড়কে নসিমন, করিমন, ভটভটি, ইজিবাইক ইত্যাদি যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখতে ব্যবস্থা গ্রহণ ও মহাসড়কে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া যানবাহন না থামানোর জন্যও সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশ দেন।

সভায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি, রাজশাহীর প্রিন্সিপাল (অতিরিক্ত আইজিপি) মোহাম্মদ নাজিবুর রহমান, অতিরিক্ত আইজিপি (এএন্ডও) ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া, শিল্পাঞ্চল পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি আবদুস সালাম, এন্টি টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আবুল কাশেম,

রেলওয়ে রেঞ্জের অতিরিক্ত আইজিপি মো. মহসিন হোসেন, এসবি প্রধান মীর শহীদুল ইসলাম, সিআইডি প্রধান মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, সকল পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ও হাইওয়ে পুলিশসহ অন্যান্য ইউনিটের ডিআইজি, ঢাকা, গাজীপুর, টাঙ্গাইল, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, কুমিল্লা, নারায়নগঞ্জের পুলিশ সুপার, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, আনসার ও ভিডিপি, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

কালের আলো/এনএল/এমএইচএ

Print Friendly, PDF & Email