‘অন্যায়-অনিয়মের বিরুদ্ধে আমাদের লাশের ফুলেল প্রতিবাদ হোক’

প্রকাশিতঃ 10:01 pm | April 02, 2019

::আসিফ আকবর::

বিয়ে করতে হবে দ্রুত, তাই গলাকাটা পাসপোর্ট বানিয়ে জার্মানী যেতে চেয়েছিলাম ৯১ সালেই। প্রেম ফেলে রেখে যেতে হবে, এই চিন্তায় আর যাওয়া হয়নি। প্রতিষ্ঠা পেয়ে দেশ বিদেশ ঘুরেছি অনেক, প্রবাসীদের কাছে প্রায়ই শুনতাম একটা কথা- দেশে গিয়ে কি লাভ, জানের কোন নিরাপত্তা নাই, বিদেশেই ভাল আছি। তখন খুব রাগ হতো এসব কথা শুনে, বলেই দিতাম- আমরা দেশে আছিনা? আসলে তারাই সঠিক ছিলেন, আমি ছিলাম দেশপ্রেম নামক নেশায় আসক্ত এক সাধারন নাগরিক। তার মানে এই নয় প্রবাসীরা দেশপ্রেমিক নয়, বরং তারাই আমাদের চেয়ে দেশকে বেশী ভালবাসে।

আমি গত ৪৭ বছরে ছোট বড় অনেক দুর্ঘটনায় পড়েছি । কচ্ছপের প্রান নিয়ে আজো বেঁচে থেকে দেশের অন্ন ধ্বংস করছি। রাষ্ট্রে অনেক নিগৃহীত হয়েছি, তবুও প্রবাস জীবন বেছে নিতে চাইনি। এদেশে জীবিত মৃত কারো কোন মূল্যায়ন নেই, তবুও দেশ ছাড়ার চিন্তা মাথায় আসেনি। আমেরিকাতে ট্যাক্স পেয়ার আমি, যেহেতু ওয়ার্ক পারমিট ভিসায় যেতে হয়, তাই ট্যাক্স টাও নিয়মিত দেয়া আছে। আমেরিকান সরকার আমাকে নাগরিকত্ব দিতে প্রস্তুত আমায় হেভী প্রোফাইলের কারনে, তবুও যেতে পারছিনা, যাচ্ছিওনা।

ছেলেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে। মিলিটারী কলেজ ছেড়ে আসার পর তাদের বলেছি কানাডা অস্ট্রেলিয়া আমেরিকা না হলে অন্তত মালয়েশিয়া গিয়ে পড়। তারা দেশপ্রেমের নেশায় বুঁদ, বউ রাজী থাকলেও ছেলেরা রাজী না। যে কোন মূল্যে তাদের পার করতে চেয়েছিলাম, তারা আমাকে ছেড়ে যাবেনা। একটু আগে খবর পেলাম টুর্নামেন্ট খেলে আসার সময় আমার দুই ছেলে আর তার দুই বন্ধু রাজপথের রাজকীয় গর্তে পড়ে গেছে, তবে ভাল আছে, গাড়ী নষ্ট হয়ে গেছে। একজন অসহায় বাবা হিসেবে প্রতিদিন আল্লাহর কাছে দোয়া করি ছেলের লাশ যেন কাঁধে না নিতে হয়, তাই বাসায় ঢোকার খবর না পেলে অস্থির হয়ে থাকি।আজ থেকে মানসিক ভাবেই প্রস্তুত হয়ে গেলাম, আমরা লাশ হয়েই বেঁচে যখন আছি, তখন আর লাশের ভয় কি !!

দি তরুন মুন্সীকে বলেছিলাম অনেক ফুলের মাঝে জন্মদিনের এই ছবিটা তুলে দিন। এখন আর পুড়ে কিংবা পিষে গেলেও আফসোস নাই, ছবি তোলা শেষ। একমত হলে আপনারাও তুলে ফেসবুকে দিন, অন্যায় অনিয়মের বিরুদ্ধে আমাদের লাশের ফুলেল প্রতিবাদ হোক…

ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

কালের আলো/ওএইচ

Print Friendly, PDF & Email