ব্যাংকের টাকা নিজের মনে করে নিয়ে যাচ্ছে কিছু মানুষ : অর্থমন্ত্রী

প্রকাশিতঃ 7:31 pm | April 02, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, কিছু মানুষ আছে যারা ঋণ নেয় আর ফেরত দেয় না। ব্যাংকের টাকাকে নিজের মনে করে খেয়ে ফলে। যাদের সহযোগিতা করেছে কিছু অসৎ ব্যাংক কর্মকর্তা। ফলে ব্যাংকসহ আর্থিক খাতে সৃষ্টি হচ্ছে অস্থিরতা।

মঙ্গলবার(২ এপ্রিল) রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) প্রথম বার্ষিক ব্যবসা সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান চালাতে গেলে টাকার প্রয়োজন হয়। কিন্তু টাকার অভাবে কোনো প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয় না। প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয় তার ম্যানেজমেন্টের জন্য। অর্থাৎ ম্যানেজমেন্টের কারণে ব্যাংকগুলো নষ্ট হচ্ছে।

তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতিতে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। আগামী পাঁচ বছর সততা, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে আমাদের কাজ করতে হবে। ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর গভর্নর ফজলে কবির বলেন, বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি বর্তমানে ২৩ শতাংশের মতো আছে। এসডিজি অর্জনে ২০২৪ সালের মধ্যে এটিকে ২৬ থেকে ২৭ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। রফতানিমুখী বাণিজ্য বাড়াতে হবে।

পদ্মা ব্যাংক প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, আশা করছি, ব্যাংকটি ঘুরে দাঁড়াবে। এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে সরকারি চারটি ব্যাংকসহ একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকটিকে এখন থেকে আগ্রসী ঋণ বিতরণ থাকতে হবে। বড় ঋণ না দিয়ে ছোট ছোট ঋণ দিতে হবে। একই সঙ্গে ঋণ আদায়ের চেষ্টা করতে হবে। সর্বোপরি ব্যাংকের ইমেজ রক্ষা করতে হবে।

তিনি বলেন, সঠিকভাবে ব্যাংক পরিচালনা করতে হলে কর্পোরেট গভর্নেন্স প্রয়োজন। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিয়মনীতি করে দিলেই তৈরি হয়ে যাবে না। নিজেদের চর্চা করতে হবে। আমি আশা করব, ব্যাংকগুলো অনিয়ম বন্ধ করে সব ক্ষেত্রে কর্পোরেট গভর্নেন্স চালু করবে।

এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ব্যাংক ভালো চললে রাজস্ব ভালো পাওয়া যায়। কারণ ব্যাংকিং খাত সবচেয়ে বেশি কর প্রদান করে। কিন্তু কিছু লোকের কারণে ব্যাংকিং খাতে সমস্যা হচ্ছে। তারা ব্যাংকের টাকা নিজের টাকা মনে করে নিয়ে যায়। ঋণের অর্থ ফেরত দেয় না। এটি রোধ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।

কিছু লোকের অনিয়মের কারণে ব্যাংকিং খাতে অস্থিরতা সৃষ্টি হচ্ছে উল্লেখ করে র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, কিছু মানুষ আছে যারা ঋণ ফেরত দেবে না বলে ঋণ নেয়। আবার ঋণ ফেরত পাবে না বলেই অনেকে ঋণ দেয়। এটি বন্ধ করতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংককে এ বিষয়ে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে। যেন তারা কিছুতে পার পেতে না পারে।

অনুষ্ঠানে আরও ব্ক্তব্য রাখেন বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মো. শফিকুর রহমান পাটোয়ারী, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ, পদ্মা ব্যাংকের চেয়ারম্যান চৌধুরী নাফিজ সরাফাত ও ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী মো. এহসান খসরু প্রমুখ।

কালের আলো/এমএইচএ

Print Friendly, PDF & Email