ক্ষেপে গিয়ে অব্যাহত অগ্নিকান্ডের দায় স্বীকার করলেন জাফরুল্লাহ!

প্রকাশিতঃ 7:55 pm | April 01, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো :

হঠাৎ ক্ষেপে গেলেন ঐক্যফ্রন্টের নেতা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী। আর ক্ষেপে গিয়েই না কী তিনি অপ্রিয় সত্য কথাটিও উচ্চারণ করেছেন নিজের মুখে। রাজধানী’র চুড়িহাট্টা, বনানীর এফ আর টাওয়ার বা গুলশানের ডিএনসিসি মার্কেটের কাঁচাবাজারে অগ্নিকান্ডের দায় স্বীকারও করেছেন বিএনপি-জামায়াতের এই বুদ্ধিজীবি।

অগ্নিকান্ডে কঙ্কাল হওয়া মানুষের স্বজনদের আর্তনাদ আর আহাজারির মধ্যেই সুবোধের মতোই দোষ স্বীকার করে আরো হিংস্র হয়ে উঠার হুংকারও দিয়েছেন।

রোববার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি বলেছেন, ‘আগুন জ্বলছে, বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে আগুন জ্বলবে।’

আরো পড়ুন:
সরকারকে ‘বেকায়দায়’ ফেলতেই কী ঘন ঘন অগ্নিকান্ড?

আবারো নির্বাচনের মাধ্যমেই কেবল দেশে শান্তি ফিরে আসবে বলে থিউরি দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের এই প্রতিষ্ঠাতা।

প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে নামধারী এই বুদ্ধিজীবী বলেছেন, পুনরায় সুষ্ঠু নির্বাচন ছাড়া এখানে (দেশে) শান্তি আসবে না। আগুন জ্বলছে। বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে জ্বলবে। ধর-পাকড় করে কখনও দেশ শাসন হয় না। অনুগ্রহ করে আপনি রাজনীতিবিদদের দিয়ে দেশ চালানোর চেষ্টা করুন। গুপ্ত বাহিনী ও গোয়েন্দা বাহিনীদের পরিচালিত সরকার কখনও দেশের মঙ্গল আনে না।’

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে ভয়ঙ্কর অগ্নিমূর্তি ধারণ করেছিলো বিএনপি-জামায়াত জোটের নেতা-কর্মীরা। বাসে-ট্রাকে আগুন লাগিয়ে তাঁরা মানুষ পুড়িয়েছিলো। আগুনে পোড়া মানুষের আহাজারির দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছিলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিট।

ওই সময় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের প্রতিরোধ কর্মসূচি থেকে বলা হয়েছিলো, বিএনপি’র সফলতা বার্ন ইউনিটের আহাজারি।’

ওই সময় দেশের সাধারণ মানুষ ও পুলিশ বাহিনী ওই আগুন সন্ত্রাস রুখে দিয়েছিলো। গড়ে তুলেছিলো জনপ্রতিরোধ। পুলিশের এই সফলতার বিষয়টিকে বিভিন্ন সময়েই নিজের বক্তব্যে তুলে ধরেছেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড.মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী, বিপিএম (বার)।

গত বছরের ডিসেম্বরে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, ‘২০১৩-১৪ সালে যেভাবে দেশে আগুন সন্ত্রাস ছড়িয়ে পড়েছিল, তা পুলিশ বাহিনীর দৃঢ়তার জন্য রোধ করা সম্ভব হয়েছে।’

গত মাসেও চাঁদপুরে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশ দেশের বিরুদ্ধে যেকোন ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াবে। সবাই দেখেছেন ২০১৩-১৪ সালে একটি গোষ্ঠি সারাদেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করেছে আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে।

সেই সময় আমরা অনেক পুলিশ সদস্যকে হারিয়েছি। ঠিক সেই সময়ও আমরা অপতৎপরতা রুখে দিয়েছি। সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে বাংলাদেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।’

সূত্র মতে, ২০১৩-১৪ সালে জ্বালাও পোড়াওয়ের মধ্যে দিয়ে সরকারের পতন ঘটাতে রীতিমতো ব্যর্থতার পাশাপাশি ঘৃণাভরে প্রত্যাখিতও হয় বিএনপি-জামায়াত জোট। কিন্তু এবার নতুন স্টাইলে সরকার উৎখাতে ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে দলটি। যুক্তরাজ্যে পলাতক দন্ডপ্রাপ্ত এক নেতা আবারো আগুন সন্ত্রাসের রাজনীতি শুরু করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

দেশের সাধারণ মানুষকে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তুলতে এজন্য মহল বিশেষকে বিপুল পরিমাণ অর্থের যোগানও দিয়েছেন বলে গোয়েন্দা তথ্যে উঠে এসেছে। তবে বরাবরের মতো এবারো সাধারণ মানুষও দেশ বিরোধী ওই চক্রটিকে সন্দেহের চোখেই দেখছে। বিভিন্ন ভবনে সাম্প্রতিক আগুন সন্ত্রাসকে একটি বিশেষ গোষ্ঠীর পরিকল্পিত নাশকতা হিসেবেই মনে করছেন তাঁরা।

সাধারণ মানুষের এমন আশঙ্কা আবার সত্যে প্রমাণিত হয়েছে খোদ বিএনপি’র প্রধান বুদ্ধিজীবী ডা: জাফরুল্লাহ’র হুংকারে। তিনি নিজের মুখেই বলেছেন, বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে আগুন জ্বলবে।’

ডা: জাফরুল্লাহ ইতোপূর্বে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে মনগড়া, ভিত্তিহীন ও নির্লজ্জ মিথ্যাচার করে পরবর্তীতে ক্ষমা ও দু:খ প্রকাশ করেছিলেন।

সেনাবাহিনীর মতো একটি পেশাদার, সুশৃঙ্খল, আধুনিক ও শক্তিশালী বাহিনীর ঐক্য ও সংহতিকে বিনষ্ট করতে ষড়যন্ত্রের জাল বুনে শেষ পর্যন্ত জনমানসে ধিক্কৃত হয়ে পিছু হটেছিলেন। স্বাধীনতা বিরোধী এই শক্তিই এখন সারাদেশে পরিকল্পিত অগ্নিসংযোগ করে দেশের মানুষকে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলার কুটকৌশল নিয়েছে।

এই শক্তির ‘থিংকট্যাঙ্ক’ জাফরুল্লাহ নিজের মুখেই সেই কথা স্বীকার করে নেওয়ায় জ্বালাও-পোড়াও অপরাজনীতি’র বিরুদ্ধে সতের কোটির বাংলাদেশ আবারো সমুচিত জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

কালের আলো/এএ

Print Friendly, PDF & Email