মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের হাল নিয়ে কালের আলোতে ধারাবাহিক প্রতিবেদন

প্রকাশিতঃ 3:32 pm | February 21, 2019

বিশেষ প্রতিবেদক, কালের আলো :

এই তো সেইদিনও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে (ডিএনসি) বলা হতো ‘ঢাল নাই তলোয়ার নাই নিধিরাম সর্দার’। অন্যান্য সংস্থাগুলো যেভাবে মাদক নিয়ন্ত্রণে তৎপরতা দেখিয়েছে, নিজেদের সামর্থ্যরে কথা জানান দিয়েছে ঠিক তখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি অধিদপ্তরটি। ফলে নানা টিপ্পনি, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ নীরবেই হজম করতে হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান থেকে শুরু করে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদেরও।

২০১৮ সালের ২৬ জুন রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক মাদক বিরোধী দিবসের আলোচনা অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর উপস্থিতিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) জামাল উদ্দীন আহমেদ ডিএমপি কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়াকে দেখিয়ে আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘আমার বন্ধু আসাদুজ্জামান মিয়া যখন একটি বস্তিতে দুই হাজার পুলিশ নিয়ে অভিযান পরিচালনা করেন, তখন আমি মনে মনে ভাবি, সারা বাংলাদেশে আমরা সাড়ে ছয়শ নিয়ে আমাদের অভিযানগুলো পরিচালনা করছি।’

আরো পড়ুন:
‘ঠুঁটো জগন্নাথ’ অপবাদ কাটিয়ে উঠছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরে দুই হাজারের মতো জনবল থাকলেও ‘অপারেশনাল ফোর্স’ এর সদস্য সংখ্যা সাড়ে ছয়শ বলেও সেদিন জানিয়েছিলেন মহাপরিচালক। এই সভাতেই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরকে ঢেলে সাজানোর কথা জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও একাত্তুরের রণাঙ্গণের বীর সেনানী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) জামাল উদ্দীন নিজের অধিদপ্তরটিকে ‘কাজের কাজী’ বানানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

লোকবল ও যানবাহন সঙ্কটসহ নানা সমস্যা দূরীকরণে সরকার উদ্যোগী ভূমিকা নেওয়ায় ক্রমশ নিজের পায়ে দাঁড়াতে শুরু করেছে অধিদপ্তরটি। গত এক বছরে ৪৯ টি যানবাহনের অনুমতি মিলেছে। জনবল বাড়াতে ১ হাজার ৫৯৭ টি নতুন পদ সংযোজন হতে যাচ্ছে অর্গানোগ্রামে।

গত বছর মাদকের ৫০ গডফাদারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই বছরও একই টার্গেট নিয়ে কাজ করছে অধিদপ্তরটির কর্মীরা। ইতোমধ্যেই মিলেছে নিজস্ব বহুতল ভবন। প্রয়োজনীয় অনেক উপাদানেরও ব্যবস্থা হচ্ছে।

আরো পড়ুন:
দেশকে মাদকমুক্ত করার অঙ্গীকার ডিজি জামাল উদ্দীনের

অধিদপ্তর থেকে বিভাগ পর্যায়ে ২০০ শয্যার নিরাময় কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রকল্প প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। পরিকল্পনা রয়েছে বৃহত্তর জেলাগুলোতে ও পরবর্তীতে সব জেলাতেই একটি করে নিরাময় কেন্দ্র গড়ে তোলার, কালের আলো’র সঙ্গে সাক্ষাতকারে এসব বিষয়াদিই জানিয়েছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) জামাল উদ্দীন আহমেদ।

আরো পড়ুন:
বিভাগ পর্যায়ে ২০০ শয্যার নিরাময় কেন্দ্র ও দুই বিভাগে কেমিক্যাল ল্যাব করছে ডিএনসি

এই অধিদপ্তরটির প্রধান কর্মকর্তা সম্প্রতি এক বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচাস্থল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে নিজ অফিস কক্ষে কালের আলো’র সঙ্গে দীর্ঘ সাক্ষাতকারে অধিদপ্তরটিকে শক্ত ভিত দেওয়ার লক্ষ্যে নানা উদ্যোগ ও পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে আলাপচারিতার ভিত্তিতে তিন পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদন প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে কালের আলো।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীন এই অধিদপ্তরটির হালহকিকত সম্পর্কে জানতে সবাই নিয়মিত চোখ রাখুন জনপ্রিয় গণমাধ্যম কালের আলোতে।

কালের আলো/এসআর/এএ

Print Friendly, PDF & Email