‘শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা নিশ্চিতে প্রয়োজনে দুদকের ১৬৬ ধারা প্রয়োগ হবে’

প্রকাশিতঃ 2:13 pm | January 27, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে কাউকেই ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ।

আজ রোববার সকাল ৯টা ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম নগরীর কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে তিনি একথা বলেন।

দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে কাউকেই ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। যে কোনো মূল্যে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে দুদক দণ্ডবিধির ১৬৬ ধারা প্রয়োগ করবে।’

‘ভবিষ্যত প্রজন্মের ক্ষতিসাধন করবেন বা করার চেষ্টা করবেন এমন কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না’ বলেও হুঁশিয়ার করেন তিনি।

জানা যায়, দুদক চেয়ারম্যানের কাছে বিশেষ মাধ্যমে খবর আসে চট্টগ্রাম মহানগরীর অধিকাংশ বিদ্যালয়ে শিক্ষকগণ নিয়মিত স্কুলে আসেন না। বিষয়টি গোপন রেখে দুদক চেয়ারম্যান সোমবার সকাল ৮টা ২৫ মিনিটে পৌঁছে যান চট্টগ্রামে।

এরপর সকাল ০৯টা ১৫ মিনিটে হাজির হন নগরীর কাট্টলী নুরুল হক চৌধুরী প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে। এ সময় স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী ও অভিভাবকদের স্কুলের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে বিস্মিত হন তিনি। পরে দুদক চেয়ারম্যান স্কুলে ঢুকে দেখেন স্কুলের ৮ জন শিক্ষকের মধ্যে একমাত্র ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উপস্থিত রয়েছেন।

অন্যদিকে ছাত্র-ছাত্রীরা বিদ্যালয়ে প্রাঙ্গনে আশপাশে আচার-চানাচুর খেয়ে অলস সময় পার করছে। পরে দুদক চেয়ারম্যান অভিভাবকদের কাছে গিয়ে তাদের সন্তানদের শিক্ষা নিয়ে এই হতাশা ব্যক্ত করেন।

এরপর দুদক চেয়ারম্যান যান নগরীর ভাটিয়ারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। সেখানে গিয়ে দেখেন ১১ জন শিক্ষকের মধ্যে ২ জন শিক্ষক অনুপস্থিত। তবে তাদের অনুপস্থিতির কারণ স্কুল কর্তৃপক্ষ দুদককে জানাতে পারেনি।

এ সময় দুদক চেয়ারম্যান ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতির শিট পরীক্ষা করে দেখেন। কিন্তু গতকাল যেসব শিক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল তাদের অনেককেই উপস্থিত দেখানো হয়েছে। আবার বেলা ১০টা পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের রোল কল করা হয়নি। এ বিষয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।

এরপর দুদক চেয়ারম্যান পরিদর্শনে যান নগরীর শীতলপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করা কোনো শিক্ষার্থীকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় সুযোগ দেয়নি কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি জানতে পেরে সন্তোষ প্রকাশ করেন দুদক চেয়ারম্যান।

তবে নবম শ্রেণিতে এক বা একাধিক বিষয়ে ফেল করা ছাত্র ছাত্রীদের ২০০০ টাকার বিনিময়ে দশম শ্রেণিতে প্রমোশন দেওয়ার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ। এ সময় তিনি বলনে, ‘এটা অনৈতিক। শিক্ষাক্ষেত্রে অনৈতিকতার কোনো স্থান থাকতে পারে না।’

কালের আলো/এএ/এমএইচএ

Print Friendly, PDF & Email