‘আরও অনেক কাজ বাকি রয়ে গেলো’

প্রকাশিতঃ 8:12 pm | January 24, 2019

আব্দুল আজিজ:

বুলবুল (আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল) ভাই, আমার খুব বেশি রকমের শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন। চলচ্চিত্রে উনার মত খুব কম লোকই আছেন যাকে মন থেকে এই রকম শ্রদ্ধা করি।

এর একটা উদাহরণ দেই। আমার অনেকগুলো সিনেমার গানের গীতিকার ও সুরকার উনি। উনি অফিসে আসলে আমি দাঁড়িয়ে থাকতাম। উনি না বসা পর্যন্ত বসতাম না। আর উনি আমাকে অনেক অনেক বেশি রকমের আদর করতেন। আর আদর করতেন বলেই শেষ কিছু বছর উনি আমার অনেক গুলি সিনেমার গান করেছেন।

আমি সবাইকে বলতাম যে আমরা এখন হয়তো বুলবুল ভাইকে যথাযথ মূল্যায়ন করছি না, কিন্তু ৫০ বছর পরে উনি হয়তো আবদুল আলিম, হাছন রাজা এই পর্যায়ে উঠে যাবে বা তারও উপরে।

বছরের অন্য সময় দেখা হোক বা কাজ হোক আর না হউক, প্রতি রোজার ঈদে উনার বাসায় যেতাম। সালাম করতাম। অনেকক্ষণ গল্প করতাম । এমনি এক ঈদের দিনে উনার মুক্তিযুদ্ধের সময়ের কিছু গল্প বলেছিলেন। তখন বলেছিলাম যে উনার মুক্তিযুদ্ধের ঘটনা নিয়ে সিনেমা বানাতে চাই । উনি রাজি হলেন। এবং এই গল্প উনি লিখে দিবেন বলে নিশ্চিত করলেন। পরে অনেক বার কথা হয়েছে, লিখি, লিখছি, ব্যস্ত বলে সময় চলে গেল। কাজটা আর শেষ হলো না। এভাবে হঠাৎ চলে যাবে ধারনাই ছিল না। উনার আসলে দেশের জন্য আরও অনেক কিছু দেওয়ার ছিল। বুলবুল ভাই, আপনার সাথ আমার আরও অনেক কাজ বাকি রয়ে গেলো।

বুলবুল ভাইয়ের সাথে আমার শেষ কথা হয় ৭ / ৮ দিন আগেই। উনি কলকাতা যাবেন, যে হোটেল বুক করে ছিলেন, শেষ মুহূর্তে তারা বুকিং বাতিল করার কারণে, সমস্যায় পড়ে যান। আমাকে হোটেল বুক করতে বলেন। আমি আমাদের নিয়মিত হোটেল (যেখানে আমাদের সব শিল্পীরা উঠেন) এ বুক করে দেই। আর হোটেল এ বলে দেই যে উনি আমাদের দেশের খুবই সন্মানিত মানুষ, উনাকে যথাযথ সম্মান করতে। বুলবুল ভাই ঢাকা ফিরে এসে আমাকে ফোন করেছিলেন, ধন্যবাদ দিলেন। হোটেল খুব ভাল আর উনাকে অনেক সম্মান ও আত্মীয়ের মতো আচরণ করেছে।

বুলবুল ভাই সম্পর্কে লিখতে গেলে আমার লেখা শেষ হবে না। পরে আরেক সময় স্মৃতিকথা গুলি লিখব। উনি কেমন মেধাবী ছিলেন, শুধু একটি ঘটনা বা লিখাতেই সবাই সহজেই বুঝতে পারবেন। সেই লেখাটা খুব শীগ্রই লিখব। মন ভারাক্রান্ত হয়ে গেছে, আর লিখতে পারছি না।

বুলবুল ভাই, আপনি যেখানেই থাকুন, ভাল থাকুন, সুন্দর থাকুন।

(ফেসবুক থেকে সংগৃহীত)

Print Friendly, PDF & Email