সরকারের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ রেজওয়ানুল গ্রেফতার

প্রকাশিতঃ 6:53 pm | January 20, 2019

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

দীর্ঘ চেষ্টার পর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষিত ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ জামাতুল মুসলিমিনের (জেএম) সন্দেহভাজন নেতা রেজওয়ানুল হারুনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

রোববার সকালে রাজধানীর ধানমন্ডির (রোড নং-৬/এ) ঈদগাহ মসজিদের সামনে থেকে রেজওয়ানকে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা দক্ষিণ বিভাগের ধানমন্ডি জোনাল টিম।

রিজওয়ান হারুন লেকহেড গ্রামার স্কুলের সাবেক মালিক। তিনি ২০১৮ সালের ৩০ জানুয়ারি গুলশান থানায় দায়ের হওয়া সন্ত্রাস বিরোধী আইনে দায়ের করা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি।

বিকালে ডিএমপির মিডিয়া এন্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মাসুদুর রহমান এসব তথ্য জানান।

ডিবির দাবি, রিজওয়ান হারুন কালো ছিলেন তালিকাভুক্ত জামাতুল মুসলিমিনের (জেএম) প্রত্যক্ষ মদদ দাতা।

রিজওয়ানসহ এই সংগঠনের অন্যরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন বাসা, মসজিদ এবং নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি সংলগ্ন হারুন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের নিজস্ব অফিসে দাওয়াতের কাজ পরিচালনা করতেন বলে ডিবি সূত্রের দাবি।

২০০৫ সালে জামাতুল মুসলিমিনের কার্যক্রম আইন-শৃংখলা বাহিনীর নজরে আসলে সংগঠনটিকে কালো তালিকাভুক্ত করা হয়।

কে এই রেজওয়ান হারুন:

২০১৭ সালের ২৩ জানুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদনে রেজওয়ান হারুনকে আইনের আওতায় আনার নির্দেশনা দেয়া হয়। ওই চিঠির আলোকে ৬ ফেব্রুয়ারি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে উপ-সচিব হাবিব মো. হালিমুজ্জামান স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশনা দিয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, পুলিশ সদর দপ্তর ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়।

গোয়েন্দা সূত্র জানায়, রেজওয়ানের সঙ্গে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের আধ্যাত্মিক নেতা কারাবন্দি জসিমউদ্দিন রাহমানী, আনসারুল্লাহার আরেক শীর্ষ নেতা রেজওয়ানুল আজাদ রানা, পাকিস্তানে গ্রেপ্তার হওয়া বাংলাদেশি ইফতেখার আহমেদ সনি, জিহাদি কার্যক্রমে অভিযুক্ত ও নিখোঁজ ফারজাদ হক তুরাজ, জুবায়েদুর রহমান, তাসনুভা হায়দার, ইয়াসিন তালুকদার, আরিফুর রহমানের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে।

তারা সবাই বিভিন্ন সময়ে রেজওয়ান হারুনের লেকহেড গ্রামার স্কুলে শিক্ষকতা করেছেন।

এমনকি হলি আর্টিজানে হামলাকারীদের প্রশিক্ষণদাতা সেনাবাহিনীর সাবেক মেজর জাহিদুল ইসলামও লেকহেড গ্রামার স্কুলের প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করতেন।

রূপনগরে নব্য জেএমবি বিরোধী এক অভিযানে জাহিদ নিহত হন।

রেজওয়ান ব্রিটেনে থাকা অবস্থায় জামায়াতুল মুসলেমিন নেতা আবু ইসা আল রাফাই (জর্ডান থেকে ব্রিটেনে বসবাসকারী) এর মাধ্যমে সংগঠনটির সঙ্গে যুক্ত হন।

২০০২ সাল থেকে বাংলাদেশে তিনি জামায়াতুল মুসলিমিন সংগঠিত করার কাজ শুরু করে।

জামায়াতুল মুসলিমিন প্রথমে দেশের ১৩ জেলায় তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ২০০৫ সালে কালো তালিকাভুক্ত হওয়ার পর তারা আরসিইউডি (রিসার্স সেন্টার ফর ইউনিটি ডেভেলপমেন্ট) ছদ্মবেশে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করে।

সর্বশেষ জামায়াতুল মুসলিমিনের আমির ছিলেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. রেজাউর রাজ্জাক। গুলশানে হলি আর্টিজানে হামলার পর ড. রেজাউর রাজ্জাক মালয়েশিয়া পালিয়ে যান।

কালের আলো/এএ/এমএইচএ

Print Friendly, PDF & Email