সরগরম প্রচারণায় মাঠে ইনু, দেখা নেই লিংকনের

প্রকাশিতঃ 5:19 pm | December 15, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

সারাদেশের মত কুষ্টিয়া-২ আসনেও জমে উঠেছে নির্বাচনী প্রচারণা। তবে প্রচারণার ক্ষেত্রে অনেকটা একপেশে ভাব দেখা গেছে মাঠে-ঘাটে সবত্র। মহাজোটের প্রার্থী জাসদ সভাপতি ও তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু ঢাক-ঢোল পিটিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নামলেও এখনো মাঠে তেমন প্রচারণা দেখা যায়নি বিএনপি প্রার্থী আহসান হাবিব লিংকনের।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর নির্বাচনী হাওয়া লাগলেও প্রার্থীরা মূল প্রচারে নামেন প্রতীক বরাদ্দ পাওয়ার পর। ইনুও তেমনি ১০ ডিসেম্বরের পর থেকে প্রতিনিয়ত নির্বাচনী পথসভা ও ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়াচ্ছেন তিনি। ভোট চাইছেন মহাজোটের নৌকার প্রার্থী হিসেবে। দিচ্ছেন মিরপুর-ভেড়ামারা উন্নয়নের নানান প্রতিশ্রুতি।

২০০৮ সালে জোটের প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে এ আসনে নির্বাচন করে জয়লাভ করেন তিনি। ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় জয়লাভ করেন ইনু।

নির্বাচনী মাঠে ইনুকে দেখা গেলেও এখন পর্যন্ত ভোটারদের কাছে ভোট চাইতে দেখা যায়নি ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী আহসান হাবিব লিংকনকে। এছাড়া বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের (এমএল) আনোয়ার হোসেন বাবলু (চাকা), বিএনএফের সাইফুল ইসলাম-(টেলিভিশন), এনপিপির মোহাম্মদ সোহাগ হোসেন (আম), ইসলামী আন্দোলনের মোজাম্মেল হক (হাতপাখা) ও মুসলীম লীগের মারফত আলী মাস্টার (হারিকেন) মার্কা প্রতীকে নির্বাচন করলেও তাদের প্রচারণা এখনো চোখে পড়ছে না।

এদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণা শুরু করে সাধারণ মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী কাস্তে প্রতীকে অধ্যাপক ওয়াহিদুজ্জামান পিন্টু।

মিরপুর ও ভোড়ামারা উপজেলা নিয়ে গঠিত কুষ্টিয়া-২ আসনের প্রতিটা মোড়ে মোড়ে রাস্তায় মহাজোটের প্রার্থী হাসানুল হক ইনুর নৌকার পোস্টার থাকলেও নেই অন্য প্রার্থীদের কোনো পোস্টার।

সাধারণ ভোটাররা বলছেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে চাই। যাকে নির্বাচিত করলে এলাকার উন্নয়ন হবে। আমরা যাকে পাশে পাবো তাকেই ভোট দিয়ে জয়ী করবো।’

এদিকে মিরপুরবাসীর দাবি, জোট সরকারের আমলে ভেড়ামারায় বিভিন্ন দিক দিয়ে মিরপুরের চেয়ে বেশি উন্নয়ন হয়েছে। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটার মিরপুরে থাকা সত্ত্বেও জোট-মহাজোটের কোনো প্রার্থী নেই এ উপজেলায়। যার কারণে দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়ন বঞ্চিত বলে দাবি মিরপুরের সাধারণ জনগণের।

তারা বলছেন, ‘ভেড়ামারায় বিদ্যুৎকেন্দ্র, শিল্প অঞ্চলসহ দৃশ্যমান উন্নয়ন হলেও মিরপুরে শুধুমাত্র রাস্তা ও বিদ্যুৎ ছাড়া তেমন কোনো দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি।’

এদিকে মহাজোটের প্রার্থী তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুর পক্ষে প্রচারণায় মাঠে নেই উল্লেখযোগ্য কোনো মিরপুর-ভোড়ামারা উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। তবে ভোটারদের কাছে দ্বারে দ্বারে ভোট চাইছেন জাসদ নেতারা।

উন্নয়নের দিক দিয়ে মিরপুর-ভেড়ামারায় কোনো পার্থক্য করা হয়নি বলে দাবি করে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘২০০৮ সালে মহাজোট ক্ষমতায় আসার পরে মিরপুর-ভেড়ামারায় অনেক উন্নয়ন করা হয়েছে। কিছু কিছু কাজ চলমান এবং কিছু আগামীতে ক্ষমতায় আসলে করা হবে। আর মিরপুর ও ভেড়ামারায় জাসদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কোনো দ্বন্দ্ব নেই।’

জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী বলেন, ‘জেলাব্যাপী বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপরে অত্যাচার করা হচ্ছে। নির্বাচনী পোস্টার ছিড়ে দেওয়া হচ্ছে, নেতাকর্মীদের আটক করা হচ্ছে, অফিস ভাঙচুর করা হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিভিন্ন অত্যাচার ও নির্যাতন সহ্য করে আমরা নির্বাচনে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছি। আর কুষ্টিয়া-২ আসনে শিগগিরই নির্বাচনী পোস্টার ও গণসংযোগ করা হবে। নেতাকর্মীরা ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।’

কালের আলো/এএ/এমএইচএ

Print Friendly, PDF & Email