ভোটে বাধা দেওয়া, স্বাধীনতা বিরোধিতার সমান : ড.কামাল

প্রকাশিতঃ 9:07 pm | November 26, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘আমরা নিরাশ হতে চাই না। ভোটে বাধা দেওয়া হলে তা স্বাধীনতার বিরোধিতার সমান। কারণ, ভোট জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার। যারা নির্বাচনে অংশ নেবেন শুধু তারাই বঞ্চিত হবে না, পুরো দেশের মানুষ বঞ্চিত হবেন।’

সোমবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এক সংবাদ সম্মেলনে ড. কামাল এসব কথা বলেন। ‘লঞ্চিং গণফোরাম লিড পাবলিক পলিসি ইনিশিয়েটিভ’ শীর্ষক এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে গণফোরাম। ঐক্যফ্রন্ট জয়ী হলে কী করবে, সে ব্যাপারে গণফোরামের পক্ষ থেকে কিছু অর্থনৈতিক প্রস্তাব তুলে ধরেন তিনি।

ড. কামাল বলেন, ‘এই মুহূর্তে দেখুন তো, নমিনেশন দেওয়ার সময়, প্রস্তাব দেওয়ার সময় শেষ হচ্ছে। ফাইলিংয়ের সময় চলে আসছে, তারপর নির্বাচন। প্রথমে নেতিবাচক কথা বলে আমরা যদি নিরাশ হয়ে যাই, তখন তো নির্বাচন নাও হতে পারে। তো সেই কারণে আমি নিরাশ হওয়ার কোনো কথা বলতে চাই না।’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা বলেন, ‘আমরা ১৬ কোটি মানুষ আছি, দেশটা আমাদের সবার। কোনো ব্যক্তির না, কোনো গোষ্ঠীর না, কোনো পরিবারের না। কোনো দলের না। দলের না, এটা তিনবার বলতে হবে।’

গত ২২ নভেম্বর রাজধানীর একটি হোটেলে ‘ভোট পাহারা’ দেওয়ার বিষয়ে দেওয়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে ড. কামাল বলেন, ‘ভোট পাহারা কি গৃহযুদ্ধ করা?’

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা পাল্টা প্রশ্ন রাখেন, ভোট কেন্দ্র পাহারা দেওয়া কীভাবে গৃহযুদ্ধের উসকানি দেওয়া হতে পারে? এসময় ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে ড. কামাল বলেন, ‘রাজনীতিতে ভাষার ব্যবহারে আরও সংযত হওয়া দরকার। নেতিবাচক-উসকানিমূলক ভাষা পরিহার করা দরকার।’

কামাল হোসেন বলেন, ‘১৬ কোটি মানুষের মধ্যে যারা সচেতন, যারা দায়িত্বশীল, তাদের নিজে নিজের এলাকায়, পাড়া-মহল্লায় পাহারা দিতে হবে। ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে হবে। এটা আমি বলেছি। এইটা বলার পর আমি অবাক হয়েছি, কেউ বললেন, কামাল হোসেন কি গৃহযুদ্ধের কথা বলছেন। আরে ভোটকেন্দ্র পাহারা দেওয়া কি গৃহযুদ্ধের কথা। কে বলেছে, ওর নামও নিতে চাই না।’
গণফোরাম সভাপতি বলেন, ‘এ দেশের মানুষ ভালো মানুষকে মূল্যায়ন করতে ভুলে যায়নি। এখনও দেশের মানুষ ভোট বিক্রিতে অভ্যস্ত হয়ে যায়নি। আমাদের দেশে ভোট কারচুপির ঘটনা ঘটেছে এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। আইনেও নেই কীভাবে এটি রোধ করা যায়। তাই জনগণকেই দায়িত্ব নিতে হবে ভোটকেন্দ্র পাহারা দিয়ে নির্বাচন করতে।’

ভোট কারচুপির আশঙ্কা করে কামাল বলেন, ‘স্বাধীনতার ৪৭ বছর পর এসে এখনও যদি দুই নম্বরি তিন নম্বরি করে ভোট দেয়া হয় তা হবে স্বাধীনতাবিরোধী কাজ। দেশের মালিক জনগণ। সত্যিকার অর্থে স্বাধীনতার মালিকরা মালিকের ভূমিকা রাখবেন কি না, শক্তভাবে দাঁড়াবেন কি না। জনগণ ঐক্যবদ্ধ হলে কায়েমি স্বার্থের বিরুদ্ধে আমরা বিজয়ী হবো।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, গণফোরামের সাধারন সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, রেজা কিবরিয়া প্রমুখ।

কালের আলো/এমআর/এমএইচএ

Print Friendly, PDF & Email