চ্যাম্পিয়ন হয়ে সবাইকে ছাড়িয়ে গেলো আবাহনী

প্রকাশিতঃ 11:02 pm | November 23, 2018

কালের আলো স্পোর্টস:

চারটি গোল, চারটি লাল কার্ড। এ পরিসংখ্যানই বলে দেয় আবাহনী ও বসুন্ধরা কিংসের মধ্যকার ফেডারেশন কাপ ফুটবলের ফাইনাল কতটা প্রতিদ্বন্দ্বীতাপূর্ণ ও উত্তেজনাকর ছিল। দুই দলেরই দু’জন করে লাল কার্ড পেয়েছেন ইনজুরি সময়ে। মারামারি করে মাঠ থেকে বহিস্কার হয়েছেন আবাহনীর জীবন, মামুন মিয়া এবং বসুন্ধরার সবুজ ও সুশান্ত ত্রিপুরা। লালকার্ডে দুই দল সমান হলেও ম্যাচের চার গোলের তিনটি করে আবাহনী ৩-১ ব্যবধানে জিতে ঘরে তুলেছে ফেডারেশন কাপের একাদশতম ট্রফি।

শুক্রবার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে তুমুল উত্তেজনাময় ফাইনালে বসুন্ধরা কিংসই এগিয়ে গিয়েছিল প্রথমে। পরে আবাহনী ৩ গোল করে প্রমাণ করেছে কেন তারা ঘরোয়া ফুটবলে সেরা এক নাম। আবাহনীর এটি ফেডারেশন কাপে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক শিরোপা। যা ঘরোয়া ফুটবলের এ টুর্নামেন্ট রেকর্ড। রেকর্ড ১১ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়াটাও। এতদিন একবার হ্যাটট্রিকসহ ১০ করে চ্যাম্পিয়ন হয়ে এ রেকর্ড ভাগাভাগি করে আসছিল মোহামেডান ও আবাহনী। শুক্রবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মধ্যে দিয়ে মোহামেডানকে দুই দিক দিয়েই পেছনে ফেললো ধানমন্ডির ক্লাবটি।

বিশ্বকাপ তারকা কলিন্দ্রেসকে আটকাও- শুরু থেকেই কৌশলটা প্রয়োগ করেছিল আবাহনী। ১৭ মিনিটের মধ্যে দুইবার ফাউলের শিকারও হন বিশ্বকাপ খেলা এ ফরোয়ার্ড। ১১ মিনিটে ইমন বাবুর বাড়ানো বল ধরার আগেই কলিন্দ্রেসকে ফাউল করেন আবাহনীর ডিফেন্ডার তপু বর্মন। মিনিট পাঁচেক পর আতিকুর রহমান ফাহাদও ফাউল করেন কলিন্দ্রেসকে। দুটি ফাউলই ছিল বিপজনক। রেফারি মিজানুর রহমান হলুদ কার্ড দিয়েছেন ফাহাদকে। যদিও তপু বর্মনের করা ফাউলটি ছিল বেশি বিপদজনক।

আগুন যেমন বেঁধে রাখা যায় না তেমন বেধে রাখা যায়নি কলিন্দ্রেসকেও। ২১ মিনিটে কলিন্দ্রেসের গোলেই এগিয়ে যায় বসুন্ধরা কিংস। আলমগীর কবির রানার ক্রস আবাহনীর গোলরক্ষক শহিদুল আলম সোহেল দূর্বল ফিস্ট করলে বল পেয়ে যান বক্সে দাঁড়ানো কলিন্দ্রেস। খানিকটা সময়ও তিনি পেয়েছিল শট নিতে। কোনো ভুল করেননি এ কোস্টারিকান ফরোয়ার্ড। তার বাম পায়ের শট থামাতে সোহেল ঝাঁপ দিলেও বল ততক্ষণে জালে।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ম্যাচে ফেরার সূবর্ণ সুযোগ এসেছিল আবাহনীর সামনে। যার দিকে তাকিয়েছিল পশ্চিম গ্যালারিভরা আকাশী-হলুদ সমর্থকরা সেই সানডে চিজোবা নিশ্চিত সুযোগ নষ্ট করেন ২৫ সেকেন্ডে। বল নিয়ে দুইজনকে কাটিয়ে বক্সের ৫ গজের মধ্যে ঢুকে তিনি যে শট নেন তা ফিরে আসে ক্রসবারে লেগে। তবে হতাশ সমর্থকরে চাঙ্গা করতে বেশি সময় নেননি এ নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড। ৫০ মিনিটে রায়হান হাসানের থ্রো দ্বিতীয় পোস্টের সামনে পড়লে সানডের বিশ্বস্ত পায়ের টোকায় বল জালে। উচ্ছ্বাসের ঢেউ ছড়ায় আবাহনী গ্যালারিতে।

আবাহনীর এগিয়ে যাওয়া গোলটিও আসে সানডের পা থেকে। ৭৯ মিনিটে সোহেল রানা বক্সে ঢুকে বল ঠেলে দেন বাম দিকে সানডেকে। ডান পায়ের নিঁখুত প্লেসিংয়ে বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক জিকোকো পরাস্ত করেন সানডে। ফেডারেশন কাপে এটি সানডের ষষ্ঠ গোল।

তিন মিনিট পরই জয়ের পাল্লাটা আবাহনীর দিকে ঝুঁকে পড়ে। ওয়ালি ফয়সালের কর্নারে দুর্দান্ত হেডে ব্যবধান ৩-১ করেন আবাহনীর হাইতিয়ান ফরোয়ার্ড বেলফোর্ট। বাকি সময়ে মাঠে উত্তেজনা তৈরি হলেও ফলাফল পরিবর্তন হয়নি। নবাগত বসুন্ধরা কিংসের ইতিহাস গড়ার স্বপ্ন চুরমার করে ফেডারেশন কাপে দ্বিতীয় হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়ে মাঠ ছাড়ে আকাশী-হলুদরা।

কালের আলো/এনএম/এমএইচএ

Print Friendly, PDF & Email