অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণে এসপি সৈয়দ নুরুল ইসলামের সাফল্যগাঁথা

প্রকাশিতঃ 12:42 pm | January 22, 2018

অ্যাক্টিং এডিটর | কালের আলো:

ডিজিটাল সাফল্যের ধারা সূচিত হয়েছে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের কার্যক্রমে। জেলা পুলিশের তথ্য প্রযুক্তিকে বিকশিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম। তাঁর হাত ধরেই ময়মনসিংহ মিডিয়া সেন্টার স্থাপনের মাধ্যমে রচিত হয়েছে নতুন এক ইতিহাস।

ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কের ৬৫ কিলোমিটার এলাকা প্রথমবারের মতো সিসি ক্যামেরা নেটওয়ার্কের আওতায় এসেছে। সেখানে ব্যবহার করা হচ্ছে ১২ কোরের অত্যাধুনিক অপটিক্যাল ফাইবার। এ মিডিয়া সেন্টার থেকেই অতি সহজেই এ দীর্ঘ মহাসড়ক মনিটরিং করছে পুলিশ। একের পর এক সাফল্যে অপরাধ রহস্য ভেদ করার গল্প হয়ে উঠেছে।

মিডিয়া সেন্টার থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ৬৫ কি.মি. এলাকা মনিটরিং করছে পুলিশ।

 

পুলিশ ও জনগণের সম্পর্কে যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা। শুধু কী তাই, দক্ষ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে জেলার অপরাধ দমন ও নিয়ন্ত্রণেও ইতিবাচক ভাবমূর্তি অর্জন করেছে জেলা পুলিশ।

সম্প্রতি পুলিশ সপ্তাহে পুলিশের ময়মনসিংহ রেঞ্জের ডিআইজি নিবাস চন্দ্র মাঝি আইজিপি ব্যাজ ও জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম বিপিএম বার পদক জিতেছেন। তাদের এমন প্রাপ্তিতে উচ্ছ্বসিত রেঞ্জ ও জেলা পুলিশ পরিবারের সদস্যরা।

বাংলাদেশ পুলিশ পদক (বিপিএম) র‌্যাঙ্ক ব্যাজ পরিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সৈয়দ নুরুল ইসলাম ময়মনসিংহ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে যোগদানের পর জেলা পুলিশে নতুন মাত্রায় উদ্দীপনা সঞ্চার করেছেন। নিজের চিন্তা-চেতনাতেও মুক্তিযুদ্ধকে সবার উপরে স্থান দিয়েছেন। তাঁর কৃতিত্বপূর্ণ ও দক্ষ নেতৃত্বে ময়মনসিংহে জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করেছে পুলিশ। সামাজি শান্তি, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনে সাফল্য ধরে রেখেছে জেলা পুলিশ।

সৈয়দ নুরুল ইসলামের হাতে গড়া ময়মনসিংহ মিডিয়া সেন্টার গত বছর উদ্বোধন করেছেন পুলিশ প্রধান আইজিপি এ.কে.এম.শহীদুল হক। পরিদর্শন করেছেন বিতর্কমুক্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খাঁন কামালসহ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিরাও। তাঁরা জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয়ের পাশেই সিসি ক্যামেরা কন্ট্রোল রুম ও সার্ভিল্যান্সের জন্য স্থাপিত অত্যাধুনিক কন্ট্রোল প্যানেলের প্রশংসা করেছেন।

গত বছরের এপ্রিলে মিডিয়া সেন্টারের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও উচ্চ রেজুলেশনের সিসি ক্যামেরা নেটওয়ার্কের সামনে দাঁড়িয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজেই অবলোকন করে গেছেন ৬৫ কিলোমিটার দূরের ভালুকা মডেল থানার হালহকিকত। সেদিন খানিক সময় পরেই মন্ত্রীর চোখের সামনে ভেসে উঠলো তার গাড়িবহরের থানা পেরিয়ে যাবার দৃশ্য।

দেখানো হলো মহাসড়কে প্রাণহানি ঘটিয়ে দ্রুত ঘাতক চালকের বাস নিয়ে চম্পট দেয়া। খানিক দূরেই দাঁড়িয়ে থাকা স্ত্রী ও সন্তানদের আর্তনাদ, আহাজারি। আর তার মিনিট কয়েক পরেই বিক্ষুব্ধ কয়েক যুবকের আগুনে অন্য একটি বাসের পুড়ে যাওয়া।

লন্ডন নগরের আদলে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার করে ময়মনসিংহ-ঢাকা মহাসড়কের ৬৫ কিলোমিটার এলাকা সিসি ক্যামেরা নেটওয়ার্কের আওতায় এনে মহাসড়ক ও পর্যায়ক্রমে নগরীর গুরুত্বর্পূ ও অপরাধ প্রবণ এলাকাগুলোকে সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে আনতে জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সৈয়দ নুরুল ইসলামের এমন পদেক্ষেপে মুগ্ধ মন্ত্রী।

সিসি ক্যামেরা কন্ট্রোল রুমের মাধ্যমে নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। যা অপরাধ মানচিত্রকে সতর্ক করেছে। পুলিশী গুরু দায়িত্ব পালন করেও সংস্কৃতি জগতের এ মানুষ কবিতা আবৃত্তি করেন দারুণ।

মৃত্তিকা বিজ্ঞানে মাষ্টার্স সৈয়দ নুরুল ইসলামকে ময়মনসিংহের বাসিন্দারা ভালবেসেছেন তার কর্মে। যেখানেই আধুনিকতা ও সময়ের দাবি সেখানেই রেখেছেন সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী ছাপ।

পুলিশ সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যদের পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য ক’দিন আগেও ছুটতে হতো বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক ল্যাবে। এ সমস্যাটিও দৃষ্টি এড়ায়নি এসপি সৈয়দ নুরুল ইসলামের। চলমান এ বাস্তবতায় মানসম্মত সেবার নিশ্চয়তায় পুলিশ সদস্য, তাদের পরিবার ও মুক্তিযোদ্ধাদের সেবার জন্য প্রথমবারের মতো ডায়াগনস্টিক ল্যাবের সংযোজন ঘটিয়েছেন তিনি। জার্মানী থেকে কিনেছেন অত্যাধুনিক মেশিনপত্র। নিয়েছেন দক্ষ টেকনেশিয়ান।

সাধারণত রক্তের কোলেস্টরেল পরীক্ষা করতে নগরীর নামিদামি প্রাইভেট হাসপাতালে যেখানে ১ হাজার ১’শ টাকা থেকে ১ হাজার ২’শ টাকা লাগে সেখানে এ ল্যাবে মাত্র ৫০ টাকায় এসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পারছেনন পুলিশ সদস্যরা। আর এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন পুলিশের ঢাকা রেঞ্জের বর্তমান ডিআইজি ও ময়মনসিংহ রেঞ্জের তৎকালীন ডিআইজি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।

ময়মনসিংহের এসপি সৈয়দ নুরুল ইসলামের সময়ে তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারে অপরাধ রহস্য দ্রুততম সময়ে উদঘাটন করা সম্ভব হচ্ছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি সংবাদকর্মীদের মুখোমুখি হচ্ছেন। মিডিয়া কর্মীদের সঙ্গে তার সম্পর্কটা সহজ ও নিবিড়। এসপি নিজেই বলেন, তিনি মিডিয়া বান্ধব একজন এসপি।

এসপি সৈয়দ নুরুল ইসলাম ময়মনসিংহকে মাদক ও জঙ্গিমুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছেন। তার এ দৃঢ় প্রত্যয় মাদক ও জঙ্গি বিরোধী জিরো টলারেন্সকে উচ্চকিত করেছে। তার নেতৃত্বে এ জেলায় অপরাধ শুন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে পুলিশ কোমর বেঁধে কাজ করছে।

আইন-শৃঙ্খলার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলাতেও তিনি আন্তরিক ও সচেতন। তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে জেলার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সাফল্যের নজির রেখেছে। তাঁর কঠোর নির্দেশনা জেলা পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের কর্মদক্ষতা ও সাফল্যে বাড়তি গতি এনেছে। জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশিকুর রহমানের নেতৃত্বে মাদক, সন্ত্রাস নির্মুল ও অস্ত্র উদ্ধারেও সাফল্য অব্যাহত রয়েছে। জনমনে প্রশংসিত হচ্ছে ময়মনসিংহ জেলা পুলিশের কার্যক্রম।

 

কালের আলো/এএ

Print Friendly, PDF & Email