‘প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা থাকা উচিত’

প্রকাশিতঃ 8:19 pm | October 12, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক, কালের আলো:

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. আকবর আলী খান বলেছেন, ‘কোটা কোন চিরস্থায়ী ব্যবস্থা নয়, তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা পদ্ধতি থাকা উচিত। সম্প্রতি কোটা বাতিলের আগেও প্রতিবন্ধীদের জন্য নির্ধারিত এক শতাংশ কোটা যথাযথভাবে পূরণ করা হয়নি। তাই প্রয়োজনীয় নিয়ম করে সাময়িকভাবে কোটা ব্যবস্থা আরো কিছুদিন রাখা যেতে পারে।’

আজ শুক্রবার ব্র্যাক সেন্টারে প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা সংরক্ষণ নিয়ে আয়োজিত ছায়া সংসদ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আকবর আলী খান। এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম এর উদ্যোগে যুব সম্মেলন-২০১৮ এর অংশ হিসেবে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ এবং ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়।

আকবর আলী খান বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে তাদের শারীরিক সক্ষমতা, উপযুক্ত কর্মপরিবেশ এবং অনুকুল অবকাঠামো বিবেচনায় নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি খাতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।’

বিতর্ক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচায, সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার এবং গ্রাম বিকাশ সহায়ক সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মাসুদা ফারুক রত্না।

অনুষ্ঠানে ড. আকবর আলী খান বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের অধিকার বিষয়টিকে করুণার দৃষ্টিতে দেখার পরিবর্তে অধিকারের দৃষ্টিতে দেখা প্রয়োজন।’ তিনি বলেন, ‘শুধু সরকারি চাকরি নয়, বেসরকারি খাতেও প্রতিবন্ধীদের কর্মসংস্থানের বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।’

সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘চাকরিতে কোটার প্রয়োজন আছে। তবে একই সাথে প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা সংরক্ষণের পাশাপাশি সমাজকেও প্রতিবন্ধী বান্ধব হতে হবে।’

আয়োজক সংগঠন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, ‘প্রতিবন্ধীসহ পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় আমরা মুখে যত কথাই বলি না কেনো বাস্তবে এর চিত্র ভিন্ন। সরকারি চাকুরিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য তিন থেকে পাঁচ শতাংশ কোটা বরাদ্দ, জাতীয় সংসদে কমপক্ষে দুইটি সংরক্ষিত আসন, প্রতিবন্ধী ভাতা বৃদ্ধি, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সময় বৃদ্ধি, চাকুরিতে আবেদনের বয়স বাড়ানো, প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থান তৈরি করাসহ তাদের সকল অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।’

এরইমধ্যে সরকারি চাকরিতে প্রতিবন্ধীদের জন্য বাতিল করা কোটা পুনরায় বহালের দাবি করে জনাব কিরণ বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রয়োজনীয় কর্মসংস্থান, উপযোগী কর্মপরিবেশ, গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষা, উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, প্রয়োজনীয় অবকাঠামো, প্রবেশগম্যতা নিশ্চিত করা জরুরি।’ কিরণ আরও বলেন, ‘প্রতিবন্ধীদের সুরক্ষায় নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি করাসহ ইতিবাচক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি। আর তাই প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীকে মূলধারায় সম্পৃক্ত করে টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা প্রদান করতে হবে।’

বিতর্ক অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ইডেন মহিলা কলেজের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে। অনুষ্ঠান শেষে বিতার্কিকদের ক্রেস্ট ও সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।

কালের আলো/এমএইচ

Print Friendly, PDF & Email